শিশুর নাক বন্ধ হলে যা করবেন

শীতে শিশুদের নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। ঠান্ডা মৌসুমে ঘরের অ্যালার্জেন, শুষ্ক বাতাস ও ভাইরাস সংক্রমণে সর্দি জমে সহজেই নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

 

সমস্যা হলো, শিশুরা নিজে নিজে নাক পরিষ্কার করতে পারে না। অস্বস্তি বোধ করায় কান্নাকাটি শুরু করে দেয় ও বিরক্ত করে। এখানে নবজাতক থেকে চার বছর পর্যন্ত শিশুদের নাক বন্ধে করণীয় উল্লেখ করা হলো।

 

* স্যালাইন ড্রপ ব্যবহার করুন: যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের মতে, শিশুদের বয়স ৪ বছর পূর্ণ না হলে নাকের ডিকনজেসটেন্ট ড্রপ বা স্প্রে ব্যবহার করা যাবে না। নবজাতক ও অল্পবয়সী শিশুদের জন্য স্যালাইন ড্রপ হলো, নাকের একমাত্র নিরাপদ স্প্রে। বাজারে স্যালাইন নাকের ড্রপ কিনতে পাওয়া যায়। এছাড়া বাসায় আধা কাপ কুসুম গরম পানিতে চা-চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ লবণ গুলে স্যালাইন ড্রপ তৈরি করতে পারেন। আপনার শিশুকে চিৎ করে শোয়ানোর পর নাকের প্রত্যেক ফোঁটায় দুই-তিন ফোঁটা স্যালাইন ড্রপ দিন। নাকের ভেতর থেকে স্যালাইন ড্রপ অথবা সর্দি বের হয়ে আসলে টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন। নবজাতকের ক্ষেত্রে, স্যালাইন ড্রপ দেওয়ার পর বাল্ব সিরিঞ্জ দিয়ে নাকের সর্দি বের করে ফেলুন। অভিজ্ঞ কারো থেকে বাল্ব সিরিঞ্জের ব্যবহারবিধি জেনে নিন।

 

* বাথরুমকে বাষ্পায়িত করুন: বাথরুমে কিছু মিনিট হট শাওয়ার চালু রাখুন। তারপর বাথরুম বাষ্পে পরিপূর্ণ হলে আপনার শিশুকে নিয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকুন। এতে নাকের সর্দি পাতলা হবে। সাবধান, শিশুকে হট শাওয়ারে গোসল করাবেন না। অন্যথায় ত্বক পুড়ে যাবে।

 

* হিউমিডিফাইয়ার চালু করুন: শীতের ঠান্ডা তাড়াতে অনেকেই ঘরের উষ্ণতার জন্য যা করা প্রয়োজন তা করেন। কিন্তু হিটার চালু করলে শুষ্ক বাতাসে শিশুদের নাক বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিও আছে। শিশুদের নাক বন্ধ হয়ে গেলে এবং হিটার চালু রাখলে সমস্যাটি আরো বেড়ে যাবে। অন্যদিকে হিটার বন্ধ করে হিউমিডিফাইয়ার চালু করলে ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা যোগ হবে। এতে আপনার শিশুর নাকের সর্দি পাতলা হবে ও স্বস্তি পাবে। এটা রাতে বিশেষ কার্যকরী। ছত্রাক প্রতিরোধে হিউমিডিফাইয়ারকে পরিষ্কার রাখতে হবে।

 

* পানি পান করান ও বিশ্রামে রাখুন: শরীরের ডিহাইড্রেশন এড়াতে শিশুদেরকে পর্যাপ্ত পানি পান করাতে হবে। ডিহাইড্রেশনে বন্ধ নাকের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। শীতে শিশুরা পানি পানে তীব্র অনীহা দেখায়। তাই তাদেরকে পর্যাপ্ত পানি পান করানোর চেষ্টা করতে হবে। যথেষ্ট পরিমাণে বুকের দুধ পান করছে কিনা সেই খেয়াল রাখতে হবে। শিশুরা অসুস্থ হলে বেশি করে ঘুমানোর প্রয়োজন পড়ে। ঘরের পরিবেশকে নির্বিঘ্ন ঘুমের উপযোগী করে তুলুন। পর্যাপ্ত বিশ্রামে শারীরিক অসুস্থতা দ্রুত সেরে যায়।

কখন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন?

শিশুদের নাক বন্ধ হয়ে গেলে দুশ্চিন্তা করবেন না। সাধারণত ঘরোয়া চিকিৎসায় তিন-চার দিনে নাক খুলে যায়। তবে আপনার শিশুর শ্বাসপ্রশ্বাস কঠিন হলে, বুকের ভেতর থেকে অস্বাভাবিক শব্দ বের হলে, দুধপানে অনীহা দেখালে, খাবার খেতে না চাইলে অথবা জ্বরের মাত্রা উদ্বেগজনক হলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। চার-পাঁচদিনে নাক পরিষ্কার না হলেও চিকিৎসক দেখানো ভালো।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» পলাশের যুবদল নেতা মনিরুজ্জামানের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

» লক্ষ্মীপুরে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, ফের বন্যার আশংঙ্কা! 

» বড়াইগ্রামে বনপাড়া পৌরসভার সেরা করদাতাদের সম্মাননা প্রদান

» ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে ব্র্যাক ব্যাংকের ক্যারিয়ারটক আয়োজন

» লালমনিরহাট সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ

» প্রাইম ব্যাংক এবং এক্সেল টেলিকম-এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

» রিয়েলমি ১২-তে হট অফার, ৩০০০ টাকার অবিশ্বাস্য মূল্যছাড়!

» জামালপুরের বকশীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে নারীসহ সাত জনকে পুশইন

» ওয়ানপ্লাস বাংলাদেশে আনল নতুন নর্ড ৫ সিরিজের স্মার্টফোন ও আইওটি ডিভাইস

» এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দেশের ১৩৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শিশুর নাক বন্ধ হলে যা করবেন

শীতে শিশুদের নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। ঠান্ডা মৌসুমে ঘরের অ্যালার্জেন, শুষ্ক বাতাস ও ভাইরাস সংক্রমণে সর্দি জমে সহজেই নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

 

সমস্যা হলো, শিশুরা নিজে নিজে নাক পরিষ্কার করতে পারে না। অস্বস্তি বোধ করায় কান্নাকাটি শুরু করে দেয় ও বিরক্ত করে। এখানে নবজাতক থেকে চার বছর পর্যন্ত শিশুদের নাক বন্ধে করণীয় উল্লেখ করা হলো।

 

* স্যালাইন ড্রপ ব্যবহার করুন: যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের মতে, শিশুদের বয়স ৪ বছর পূর্ণ না হলে নাকের ডিকনজেসটেন্ট ড্রপ বা স্প্রে ব্যবহার করা যাবে না। নবজাতক ও অল্পবয়সী শিশুদের জন্য স্যালাইন ড্রপ হলো, নাকের একমাত্র নিরাপদ স্প্রে। বাজারে স্যালাইন নাকের ড্রপ কিনতে পাওয়া যায়। এছাড়া বাসায় আধা কাপ কুসুম গরম পানিতে চা-চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ লবণ গুলে স্যালাইন ড্রপ তৈরি করতে পারেন। আপনার শিশুকে চিৎ করে শোয়ানোর পর নাকের প্রত্যেক ফোঁটায় দুই-তিন ফোঁটা স্যালাইন ড্রপ দিন। নাকের ভেতর থেকে স্যালাইন ড্রপ অথবা সর্দি বের হয়ে আসলে টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন। নবজাতকের ক্ষেত্রে, স্যালাইন ড্রপ দেওয়ার পর বাল্ব সিরিঞ্জ দিয়ে নাকের সর্দি বের করে ফেলুন। অভিজ্ঞ কারো থেকে বাল্ব সিরিঞ্জের ব্যবহারবিধি জেনে নিন।

 

* বাথরুমকে বাষ্পায়িত করুন: বাথরুমে কিছু মিনিট হট শাওয়ার চালু রাখুন। তারপর বাথরুম বাষ্পে পরিপূর্ণ হলে আপনার শিশুকে নিয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকুন। এতে নাকের সর্দি পাতলা হবে। সাবধান, শিশুকে হট শাওয়ারে গোসল করাবেন না। অন্যথায় ত্বক পুড়ে যাবে।

 

* হিউমিডিফাইয়ার চালু করুন: শীতের ঠান্ডা তাড়াতে অনেকেই ঘরের উষ্ণতার জন্য যা করা প্রয়োজন তা করেন। কিন্তু হিটার চালু করলে শুষ্ক বাতাসে শিশুদের নাক বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিও আছে। শিশুদের নাক বন্ধ হয়ে গেলে এবং হিটার চালু রাখলে সমস্যাটি আরো বেড়ে যাবে। অন্যদিকে হিটার বন্ধ করে হিউমিডিফাইয়ার চালু করলে ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা যোগ হবে। এতে আপনার শিশুর নাকের সর্দি পাতলা হবে ও স্বস্তি পাবে। এটা রাতে বিশেষ কার্যকরী। ছত্রাক প্রতিরোধে হিউমিডিফাইয়ারকে পরিষ্কার রাখতে হবে।

 

* পানি পান করান ও বিশ্রামে রাখুন: শরীরের ডিহাইড্রেশন এড়াতে শিশুদেরকে পর্যাপ্ত পানি পান করাতে হবে। ডিহাইড্রেশনে বন্ধ নাকের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। শীতে শিশুরা পানি পানে তীব্র অনীহা দেখায়। তাই তাদেরকে পর্যাপ্ত পানি পান করানোর চেষ্টা করতে হবে। যথেষ্ট পরিমাণে বুকের দুধ পান করছে কিনা সেই খেয়াল রাখতে হবে। শিশুরা অসুস্থ হলে বেশি করে ঘুমানোর প্রয়োজন পড়ে। ঘরের পরিবেশকে নির্বিঘ্ন ঘুমের উপযোগী করে তুলুন। পর্যাপ্ত বিশ্রামে শারীরিক অসুস্থতা দ্রুত সেরে যায়।

কখন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন?

শিশুদের নাক বন্ধ হয়ে গেলে দুশ্চিন্তা করবেন না। সাধারণত ঘরোয়া চিকিৎসায় তিন-চার দিনে নাক খুলে যায়। তবে আপনার শিশুর শ্বাসপ্রশ্বাস কঠিন হলে, বুকের ভেতর থেকে অস্বাভাবিক শব্দ বের হলে, দুধপানে অনীহা দেখালে, খাবার খেতে না চাইলে অথবা জ্বরের মাত্রা উদ্বেগজনক হলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। চার-পাঁচদিনে নাক পরিষ্কার না হলেও চিকিৎসক দেখানো ভালো।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com